দেশের প্রচলিত আইন, সরকারের নির্বাহী আদেশ, সরকারী গেজেট নোটিফিকেশন, সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ এর বিধান লংঘন করে ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের মাধ্যমে এখতিয়ার বহির্ভূত আদেশ জারী এবং সে আলোকে কার্য সম্পাদন করা বিসিক চেয়ারম্যান মুহঃ মাহবুবর রহমান এবং বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী এর জন্য নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের নেই কোন জবাবদিহীতা, নেই কোন দায়বদ্ধতা।
তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তাদের কার্যক্রমে প্রতীয়মান হয় তারা কোন প্রকার জবাবদিহীতার আওতাধীন নয়। তারা অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী, তারা স্বেচ্ছাচারী মনোভাবাপন্ন, তাদের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কেউ নেই। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্বিকার ভূমিকা বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিক পরিচালক পর্ষদকে আইন বহির্ভূত কাজে উৎসাহ প্রদান করে চলেছে, যার দরুন তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে বেপরোয়া মনোভাব পোষণ করে বে-আইনী কার্যক্রম করার সুযোগ এবং সাহস পাচ্ছেন।
যে কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে থাকে সরকার নির্ধারিত বা সরকার অনুমোদিত আইনের/বিধি-বিধানের মাধ্যমে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতার হতে গড়া প্রতিষ্ঠান ১৯৫৭ সালের এক সংসদীয় আইনে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বিসিক। সময়ের প্রয়োজনে বিসিক আইনটি যুগোপযোগী করার উপলব্দি থেকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ বিসিক আইন-২০২৩ পাশ ও গেজেট আকারে তা প্রকাশ করে। যার গেজেট নোটিফিকেশন নম্বর-রেজিষ্ট্রার্ড নং ডি এ-১, বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যা সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩।বিসিক আইন-২০২৩ এর ধারা নং-১০। পরিচালনা পর্ষদ।
(১) কর্পোরেশনের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে যাহা নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা- (ক) কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন; (খ) কর্পোরেশনের সকল পরিচালকগণ; (গ) শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যুন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ঘ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যুন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ঙ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যুন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (চ) শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক একজন ব্যক্তি; (ছ) চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা, যিনি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য-সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন; (জ) জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (ঘঅঝঈওই) এর সভাপতি বা তদকর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি।
বিসিক আইন-২০২৩ এর ধারা নং-১০(ছ) এর বিধান ভংগ করে বিসিক স্মারক নং-৩৬.০২.০০০০.০০৩.১৮. ০০৭.১৪/৭৮৮০ তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২৩ এর মাধ্যমে বিসিকের পরিচালক (প্রশাসন)-কে সদস্য-সচিবের দায়িত্ব প্রদান বিষয়ক আদেশটি বিসিক আইন-২০২৩ এর সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ধরনের একটি অসংগতিপূর্ণ আদেশ জারীর ফলে জাতীয় সংসদে পাশ করা বিসিক আইন-২০২৩ এর বিধানের ব্যত্যয় ঘটার পাশাপাশি সংসদীয় আইনের অবমাননা করা হয়েছে।
বে-আইনী একটি আদেশ জারী করে বিসিকের কর্মকর্তার প্রাপ্য অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে, যা সরকারী কর্মচারী শৃংখলা ও আপীল বিধিমালা-২০১৮ এর ২৬ ধারার সুনির্দিষ্ট লংঘন। তাছাড়া বিসিক চেয়ারম্যান অনুমোদিত এবং বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত ১৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখের ৭৭২৭ স্মারকের জারীকৃত আদেশের বিপরীতমুখী কাজ করেছেন বিসিক চেয়ারম্যান এবং পরিচালক (প্রশাসন)।
বিসিকের পরিচালক (প্রশাসন) বিসিকের (করপোরেশন) কর্মকর্তা নন, তিনি বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এবং সরকার নিয়োজিত ১০ জন পরিচালকের মধ্যে একজন। বিসিক আইন-২০২৩ এর ধারা নং-১০ এর (ছ) উপধারায় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা, যিনি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য-সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন। তথাপিও বিসিক চেয়ারম্যান এবং পরিচালক পর্ষদের সদস্যগণ তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিসিক কর্মকর্তার অধিকার ক্ষুন্ন করে একের পর এক বে-আইনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) ও কতিপয় প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তার কার্যক্রমে অনুপস্থিত শিষ্টাচার, সুশাসন ও আইনের শাসন। প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত বিসিক কর্মকর্তা, মাথাছাড়া দিয়ে উঠছে বে-আইনী কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ-ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
মন্তব্য করুন