মানবাধিকার এবং মৌলিক মানবিক চাহিদার ধারণাগুলি ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। মানবাধিকার-যে অধিকারগুলি প্রতিটি ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য কারণ তারা একজন মানুষ – মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণের বা পূরণ করার ক্ষমতা হিসাবে দেখা যেতে পারে। এই চাহিদা মানবাধিকারের ভিত্তি প্রদান করে। প্রতিটি মানুষের মর্যাদা এবং মূল্য আছে। প্রতিটি ব্যক্তির মৌলিক মূল্যকে আমরা স্বীকৃতি দেওয়ার একটি উপায় হল তাদের মানবাধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সম্মান করা। মানবাধিকার হল সমতা এবং ন্যায্যতার সাথে সম্পর্কিত নীতিগুলির একটি সেট। তারা আমাদের জীবন সম্পর্কে পছন্দ করার এবং মানুষ হিসাবে আমাদের সম্ভাবনা বিকাশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। তারা ভয়, হয়রানি বা বৈষম্যমুক্ত জীবনযাপনের বিষয়ে নিশ্চয়তা বিধান করে।
মানবাধিকারকে বিশদভাবে অনেকগুলি মৌলিক অধিকার হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যা সারা বিশ্বের লোকেরা একমত হয়েছে যে এটি অপরিহার্য। এর মধ্যে রয়েছে জীবনের অধিকার, ন্যায্য বিচারের অধিকার, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠর ও অমানবিক আচরণ থেকে স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, ধর্মের স্বাধীনতা এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পর্যাপ্ত জীবনযাত্রার অধিকার। এই মানবাধিকার সব জায়গার সকল মানুষের জন্য একই- পুরুষ এবং মহিলা, যুবক এবং বৃদ্ধ, ধনী এবং দরিদ্র, আমাদের পটভূমি নির্বিশেষে, আমরা কোথায় থাকি, আমরা কি ভাবি বা আমরা কি বিশ্বাস করি। এটিই মানবাধিকারকে ‘সর্বজনীন’ করে তোলে।
মানবাধিকার আমাদেরকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে একটি ভাগ করা অধিকার এবং দায়িত্বের মাধ্যমে। একজন ব্যক্তির তাদের মানবাধিকার উপভোগ করার ক্ষমতা নির্ভর করে অন্য ব্যক্তিরা সেই অধিকারগুলিকে সম্মান করে। এর মানে হল যে মানবাধিকার অন্যান্য মানুষ এবং সম্প্রদায়ের প্রতি দায়িত্ব এবং কর্তব্য জড়িত। ব্যক্তিদের একটি দায়িত্ব আছে যে তারা অন্যের অধিকারের জন্য বিবেচনা করে তাদের অধিকার প্রয়োগ করে তা নিশ্চিত করা। উদাহরণস্বরূপ, যখন কেউ তার বাকস্বাধীনতার অধিকার ব্যবহার করে, তখন অন্য কারো গোপনয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ না করে তাদের তা করা উচিত।
জনগণ যাতে তাদের অধিকার ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র এবং সরকারের একটি বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। তাদের আইন এবং পরিষেবাগুলি প্রতিষ্ঠা এবং বজায় রাখতে হবে যা মানুষকে এমন জীবন উপভোগ করতে সক্ষম করে যেখানে তাদের অধিকার সম্মানিত এবং সুরক্ষিত হয়। মানুষের মানবাধিকার হরণ করা যাবে না। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষনায় বলা হয়েছে যে কোন রাষ্ট্র, গোষ্ঠি বা ব্যক্তির কোন অধিকার ও স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে কোন কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার বা কোন কাজ করার অধিকার নেই।
মানব পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের সব সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্থান্তরযোগ্য ও অলংঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার, যা জন্মগত এবং অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার চর্চা ও ভোগ করবে এটাই তার সহজাত প্রবৃত্তি। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতি সাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারে না। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য প্রযোজ্য। এটি একাধারে আমাদের সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হলো এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। যদিও অধিকার বলতে প্রকৃতপক্ষে কি বোঝানো হয় তা এখনও পর্যন্ত বিতর্কের বিষয়। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয়টি আরও প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে। প্রথমত, একটি পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধস্থনদের অধিকার রক্ষা করবে। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র ও তৃতীয়ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে।
অমানবিক আচরণ, মানবাধিকার লংঘন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ চাকরি জীবনে পদোন্নতি না পেয়ে পদোন্নতি প্রাপ্তির জন্য আইনী প্রতিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আদালতে ন্যায্য বিচার পেলেও মুহঃ মাহবুবর রহমান,(গ্রেড-১) চেয়ারম্যান, বিসিক, শ্যামলী নবী, পরিচালক (প্রশাসন), বিসিক, মোঃ কামাল উদ্দিন বিশ্বাস, পরিচালক (অর্থ), বিসিক, মোঃ আব্দুল মতিন, পরিচালক (বিপণ্ন ও নকশা), বিসিক, কাজী মাহবুবুর রশীদ পরিচালক, দক্ষতা ও প্রযুক্তি, বিসিক শিরোনামীয় মহাক্ষমতাধর কতিপয় আমলা এবং বিসিকের নিয়োজিত আইনজীবি মোঃ মিজানুর রহমান এর আইন, আদালত অবমাননা, উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত বে-আইনী কার্যক্রম, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার এর মাধ্যমে অমানবিক আচরণে প্রায় ৪ বছরকাল মানবেতর জীবন যাপন করছেন মোঃ হুমায়ুন কবির নামের একজন বিসিক কর্মচারী ও তার পরিবার।
পদোন্নতি প্রাপ্তির বিষয়ে আইনগত প্রতিকার প্রাপ্তির জন্য মোঃ হুমায়ুন কবির, ক্যাটালগার, স্কিটি, বিসিক, ঢাকা কর্তৃক রিট পিটিশন নং-৬৭১১/২০১৬ দায়ের করার প্রেক্ষিতে দীর্ঘ শুনানী শেষে ২৯-১০-২০২০ তারিখে হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি বেঞ্চ.৩০ দিনের মধ্যে আদালতের দেয়া রায় বাস্তবায়নের বিষয়টির উল্লেখ করে মোঃ হুমায়ুন কবিরকে পদোন্নতি প্রদানের বিষয়ে আদেশ প্রদান করে। আদালতের দেয়া উক্ত রায় বাস্তবায়ন না করে বিসিক কর্তৃপক্ষ সিভিল পিটিশন ফর লীভ টু আপীল নং-৮০১/২০২১ দায়ের করেছিল। বিসিকের দায়েরকৃত উক্ত লীভ টু আপীল আবেদন সুপ্রীম কোর্টের আপীলেট ডিভিশন ৩১-০৭-২০২৩ তারিখে খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রাখেন। অর্থাৎ ৩০ দিনের মধ্যে মোঃ হুমায়ুন কবিরকে পদোন্নতি প্রদানের হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা দেখা দিয়েছে। আপীলেট ডিভিশনের রায় বাস্তবায়ন করতে হবে নতুবা রিভিউ করতে হবে, এর বাইরে ভিন্ন কোন কার্যক্রম করার সুযোগ প্রচলিত আইনে নেই।
বিশ্বব্যাপী মহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে সারা পৃথিবী লক-ডাউনে থাকাকালীন সময়ে হয়রানীমূলক বদলীর আদেশ জারীর প্রেক্ষিতে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করার অজুহাতে বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়। যদিও মোঃ হুমায়ুন কবিরকে সাময়িক বরখাস্ত বা বরখাস্ত করার কোন আদেশ জারী করা হয়নি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বে-আইনীভাবে বেতন বন্ধ রেখে একটি পরিবারের অস্তিত্ব হুমকীর মুখে ফেলার কোন অধিকার বিসিক চেয়ারম্যান, বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) এবং বিসিকের পরিচালক পর্ষদের এবং নিয়োজিত এডভোকেট এর থাকার কথা নয়। তথাপিও তারা সে কাজটি করে হুমায়ুনের প্রাপ্য অধিকার ক্ষুন্ন করেছেন, তার সাথে এবং তার পরিবারের সাথে করে চলেছেন অমানবিক আচরণ। কি দোষ করেছে হুয়ামুনের পরিবার পরিজন ? বিসিক চেয়ারম্যান একবারও ভেবে দেখেছেন কি-হুমায়ুন এর মাছুম বাচ্চাদের ভরণ পোষণ কিভাবে হচ্ছে? কি অবস্থায় আছে হুমায়ুনের পরিবারের সদস্যরা?
সার্বজনীন মানবাধিকারের ক্ষেত্রে জনগণ যাতে তাদের অধিকার ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র এবং সরকারের একটি বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। তাদের আইন এবং পরিষেবাগুলি প্রতিষ্ঠা এবং বজায় রাখতে হবে যা মানুষকে এমন জীবন উপভোগ করতে সক্ষম করে যেখানে তাদের অধিকার সম্মানিত এবং সুরক্ষিত হয়। মানুষের মানবাধিকার হরণ করা যাবে না। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষনায় বলা আছে যে, কোন রাষ্ট্র, গোষ্ঠি বা ব্যক্তির কোন অধিকার ও স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে কোন কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার বা কোন কাজ করার অধিকার নেই।
অত্যাচারী মনোভাবাপন্ন বিসিক চেয়ারম্যান মুহঃ মাহবুবর রহমান এবং তার কতিপয় অসৎ সহযোগী মোঃ হুমায়ুন কবির এর প্রাপ্য অধিকার হরণ করে তার পরিবারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন যা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। পদোন্নতি চাওয়ার প্রেক্ষিতে বুদ্ধিভিত্তিক অনাচারের মাধ্যমে মহামারী কোভিড-১৯ এবং তৎপরবর্তী বিশ্ব মন্দা প্রাদুর্ভাবে বিরাজমান অবস্থায় প্রায় ৪ বছর বেতন ভাতা বন্ধ রাখা, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের অবমাননা, স্বৈরাচারী মনোভাব সুশাসন ও আইনের শাসনের পরিপন্থী কাজ।
তাছাড়া সর্বোচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন না করে আদালতের রায় অগ্রাহ্য করে শ্যামলী নবী, পরিচালক (প্রশাসন) তিনশত টাকার নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে পদোন্নতি দাবী করবে না মর্মে বে-আইনীভাবে লিখিত দেয়ার মৌখিক নির্দেশনা প্রদানের বিষয়টি আইনের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের ইংগিত বহন করে (যার একটি অডিও ক্লিপ ধারণ করা আছে)। প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কর্মরত থেকে এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রম, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা প্রদর্শন, আদালত অবমাননা এবং মানবাধিকার হরণের বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকার কথা নয়।
বিসিক শীর্ষ প্রশাসনের মানবাধিকার লংঘন এবং অমানবিক আচরণের মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া সরকারের দায়িত্ব। প্রাতিষ্ঠানিক পদ পদবী ব্যবহার করে যে বা যারা বুদ্ধিভিত্তিক অনাচারের মাধ্যমে অত্যাচারী মনোভাব পোষণ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হবে বলে সচেতন দেশবাসী মনে করেন।