বিস্ময়কর ব্যাপার হলেও সত্য সুদুর আমেরিকায় বসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌযান নির্মাণ তদারকি করেন আমেরিকায় বসবাসরত নেভাল আর্কিটেক্ট সুজিত সাহা। নৌ পরিবহণ অধিদপ্তর থেকে তার নামে ইস্যু করা হয় টাস্ক নাম্বার। সুজিত সাহা কোথায় থাকেন তা জানেন না ডিজি শিপিং নিজেও। জানাগেছে, আমেরিকার স্থানীয় নাগরিক সুজিত সাহা বাস করেন নিউইয়র্কে।
সেখানকার স্থানীয় একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করেন তিনি। প্রকৌশলী সুজিত সাহা বিদেশে সরকারি চাকরি করেও কিভাবে ডিজি শিপিং এর প্যানেল সুপারভাইজার হিসাবে নিয়োগ পেলেন এবং কাজ করছেন সেটাই কারো বোধগম্য নয়। তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগও রয়েছে।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতিমন্ত্রীর ভয় দেখিয়ে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। নৌ প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে একাধিক কর্মকর্তাকে পদ থেকে বদলি করে দেয়ার হুমকিও দেন তিনি। অনুসন্ধানে জানাগেছে,নিউইয়র্ক ও টেক্সাসে একাধিক বাড়ী রয়েছে সুজিত সাহার। হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করে তিনি এসব বাড়ী ক্রয় করেছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।এ ছাড়া সে দেশে নিয়মিত টাকা পাচার করার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি জাহাজের নকশা, সার্ভে রেজিষ্ট্রেশন এর জন্য মোটা অংকের টাকা নিয়েও কাজ না করে হয়রানি করেন নৌযান মালিকদের। দেশে না থেকেও বুকলেট ও নকশায় সই দিয়ে মালিকদের প্রদান করেন। নকশা অনুমোদন কমিটির মেম্বারদের অবৈধভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। বিদেশে বসে মোবাইল ফোনে বারংবার কল করে বিরক্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। সুজিত সাহা লাকী মেরিন সলিউশন নামের ডিজাইন হাউজের মালিক।
সুজিত সাহার হয়রানির শিকার, বসুন্ধরা গ্রুপ, বঙ্গ গ্রুপ, ওয়েস্টার্ন গ্রুপ সহ আরোও অনেক একক নৌযান মালিক। ভোগান্তির শিকার জাহাজ মালিকগণ কখনোই তাকে তার মতিঝিল অফিসে গিয়ে পান না। অফিস স্টাফরা বলেন, ‘স্যার আমেরিকায় আছেন।’
নৌযান মাকিদের দাবী,অতি সত্তর সুজিত সাহাকে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্যানেল সুপারভাইজার থেকে বাদ দেওয়া হোক। এবং তিনি হুন্ডির মাধ্যমে আমেরিকায় টাকা পাচার করে থাকলে সেটি দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। এ বিষয়ে তারা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং দুদক চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য সুজিত সাহার মতিঝিল ‘লাকী মেরিন সলিউশন’ এর কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। অফিস স্টাফরা জানান, ‘স্যার বর্তমানে আমেরিকায় আছেন। তার মোবাইল নম্বর চাইলেও তারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’
মন্তব্য করুন