শাহ আলম সরকার।।
ঈদ ও বৈশাখকে সামনে রেখে উল্লাপাড়ায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তাঁতপল্লীর শ্রমিকেরা। বাড়তি আয়ের আশায় দিনরাত পরিশ্রম করে লুঙ্গি, গামছা, শাড়ি তৈরি করছেন তারা। তাঁতের খটখট শব্দে এখন মুখরিত উল্লাপাড়া তাঁতপল্লী এলাকা।
উল্লাপাড়া উপজেলার ইসলামপুর, বালসাবাড়ি, দাঁদপুর, পাইকপাড়া, নতুন বাবলাপাড়া, মধুপুর, পাঁচিলা, গোপিনাথপুর, কোনাবাড়ি, নতুন চাঁদপুর, নতুন দাঁদপুর ও মরিচা গ্রামে দুই লক্ষাধিক তাঁত রয়েছে। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অন্তত তিনলাখ পরিবার।
দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে উল্লাপাড়ার তাঁতের শাড়ি। এরই মধ্যে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে খরিদদারদের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতারাও শাড়ি কিনতে ভিড় করছেন উল্লাপাড়ার তাঁতপল্লীতে।
ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাপড় তৈরি করছেন তাঁত কারখানার মালিকরা। কাপড়ের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে চলেছেন তাঁত শ্রমিকরা। মালিক ও শ্রমিকদের কোলাহলে সরব হয়ে উঠেছে তাঁত পল্লী। বসে নেই নারীরা। পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে নলীভরা, সুতাপারি করা, মাড়দেয়া ও রঙ তুলিতে নকশা আঁকাসহ কাপড় বুননের কাজে সহযোগিতা করছে ওই এলাকার নারী শ্রমিকরা। তাঁত শ্রমিক সিরাজ মিয়া, রুনা ও জাবেদ, সিরাজুল ইসলাম ও খলিল মিয়া জানান, বাড়তি আয়ের আশায় আমরা ঈদকে সামনে রেখে দিন-রাত এক করে কাজ করছি যাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু আনন্দে ঈদ করতে পারি এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তাঁত মালিক শহিদুল জানান, দেশে অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিদেশি কাপড়ের প্রবেশ ও আগ্রাসনে তাঁতপণ্যের বাজার মার খাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে সুতাসহ তাঁতসামগ্রীর বাজার। এ ছাড়া ব্যাংক ঋণের সুবিধা পাচ্ছেন না ছোট ব্যবসায়ীরা। ফলে একশ্রেণির সম্পদশালী ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় জিম্মি হয়ে পড়েছে তাঁত ব্যবসা। ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণের সুবিধা দেওয়াসহ শিল্পটি রক্ষায় সরকারিভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আরেক তাঁত মালিক আব্দুল্লাহ বলেন, ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প টিকিয়ে রাখতে রং, সুতা ও কাঁচামালের দাম কমাতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন