আহসান হাবিব পঞ্চগড় প্রতিনিধি
নেপালের কাঠমুন্ডুতে ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের নায়ক ইয়ারজান বেগম। ভারতকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলের ব্যবধানে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে জয়ের মালা। অবশেষে চাম্পিয়ানশিপ শেষে টাকা তিন মাস পর নিজ জন্মভূমি পঞ্চগড়ের মাটিতে পা রেখেছেন সাফজয়ী এই তারকা ইয়ারজান বেগম। এসময় স্থানীয়দের পাশাপাশি টুকু ফুটবল একাডেমির ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে একটি নৈশ্য পরিবহনে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ে পৌছায় ইয়ারজান। এসময় তাকে টুক ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড় ও সহপাঠিরা ফুলেল মালা দিয়ে বরণ করে নেন। এদিকে তার এমন কৃতিত্বের পর পঞ্চগড়ের মাটিতে প্রথম পা রাখায় এবং বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ সহ টুকু ফুটবল একাডেমির নাম উজ্জল করায় একই দিন দুপুরে একাডেমির পক্ষ থেকে আনন্দ মিছিল হয়েছে।
এসময় একটি পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে ইয়ারজানকে নিয়ে আনন্দ মিছিলসহ শহরের রৌশনাবাগ এলাকা থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পঞ্চগড়ের টুকু ফুটবল একাডেমি। পরে সদরের হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে তার নিজ বাড়িতে যায় গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম। বাড়িতে প্রবেশ করে বাবা-মা’কে সালাম করেন সে। এদিকে তার আসার খবরে তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয়রা।
কথা হয় ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও মা রেনু বেগমের সাথে। তারা বলেন, মনে হচ্ছে আমাদের এই মেয়ে আমাদের জন্য আকাশ থেকে চাঁদ নিয়ে এসেছে। মাঝে মধ্যে মনে হয় কল্পনা দেখছি না এটা বাস্তবতা! আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া তিনি আমাদের মেয়েকে ভালো রেখেছে, এবং দেশের জন্য ভালো কিছু করার সুযোগ করে দিয়েছে।
পঞ্চগড় টুকু ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও কোচ টুকু রহমান বলেন, আমি চেষ্টা করেছি ভালো খেলোয়ার উপহার দেয়ার জন্য। স্বপ্ন ছিলো আমার এই একাডেমির খেলোয়াররা ভালো অবস্থানে পৌছাবে। অবশেষে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে এই ইয়ারজান। আজ টানা তিন মাস পর সে পঞ্চগড়ে এসেছে। তার সফলতায় আমরা গর্বিত। তাকে শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা জানাতে আনন্দ মিছিল করেছি।
এসময় পঞ্চগড়ের মেয়ে গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম বলেন, প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার প্রিয় কোচ টুকু রহমানকে। তার হাত ধরে আমি আজ এই স্থানে। আমি কখনো ভাবিনি আমার বাড়িতে এত মানুষের উপস্থিতি হবে। তাও আবার আমার জন্য। আমি চেষ্টা করেছি দেশের জন্য হয়ে খেলার। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আগামীতে দেশের জন্য আরো ভালো খেলতে পারি।
এদিকে পঞ্চগড়ের বোদা ফুটবল একাডেমির হয়ে একই দলে খেলেছেন আরো তিন জন। তারা হলেন আলপী, বৃষ্টি রায় এবং শিউলী রায়। তারাও একই দিন সকালে রেলযোগে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল রেলওয়ে স্টেশনে পৌছালে বিকেলে বোদা ফুটবল একাডেমি ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
মন্তব্য করুন