শাহ আলম সরকার।।
হে মহা ভগবান, হে লৌহিত্য, তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে ব্রহ্মার নিকট কৃপা চেয়ে স্নান উৎসবে মেতে উঠেন উল্লাপাড়া উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের পুণ্যার্থীরা। উল্লাপাড়া উপজেলার দূর্গানগর ইউনিয়নের কোণাবাড়ী গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীতে গঙ্গা স্নান করতে এসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় ও পাপ মোচনের প্রার্থনা করেছেন সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা।
হিন্দু ধর্মের মতে, এটি একটি পুণ্য কর্ম এবং স্নানের স্থানটি তীর্থ স্থান। করোতয়া নদীতে গঙ্গা স্নানে হাজারো ভক্ত ও পূণ্যার্থীদের ঢল আর উপচে ভিড় দেখা গেছে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে প্রতি বছরের মতো এ বছরেও করতোয়া নদীর পাড়ে শত বছরের পুরোনো এই উৎসবে করোতয়া নদীর পাড়ে গঙ্গা স্নান উৎসব এবং মেলার আয়োজন করেছেন দূর্গানগর ইউনিয়নের বালসাবাড়ী ও কোণাবাড়ী গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এদিকে, গঙ্গা স্নানকে কেন্দ্রে করে মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় মিষ্টি জাতীয় খাবার, মাটির তৈরি খেলনা- পুতুল, ঘোড়া, হাড়ি-পাতিল, বাস ও বেতের তৈজসপত্র, নাগরদোলাসহ চিড়া-মুড়ি, দইয়ের দোকান। দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন।
দেখা গেছে, ভোর সকাল থেকেই গঙ্গা স্নানে উল্লাপাড়া উপজেলা ছাড়াও শাহজাদপুর, বেলকুচি,কামাখন্দ, তাড়াশ ও সিরাজগঞ্জ সদর থেকে নানা শ্রেণি বয়সী হাজারো ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা করতোয়া নদীর পাড়ে স্নান করতে আসেন। এ সময় তারা সৃষ্টিকর্তার বিভিন্ন মানত ও দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় ও পাপ মোচনে প্রার্থনা করে পুজা অর্চনা করেন। এদিকে, গঙ্গা স্নান তার সাথে যোগ হয়েছে মেলা ফলে সব মিলিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
স্নান করতে আসা মেহনপুর ইউনিয়নের বাবলু ভৌমিক বলেন, ‘করোতয়ার স্নান তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। এখানে পূণ্যার্থীরা স্নান করছে তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য’।
গঙ্গা স্নান করতে আসা রতন কুমার, অভিজিৎ রায়, নিতাইসহ অনেকেই বলেন, ‘নদীর জলে গঙ্গা স্নান করেছি ও পূজা দিয়েছি। এখানে স্থানীয় লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ গঙ্গা স্নান করতে আসেন এবং মেলা দেখতে আসেন।
গঙ্গা স্নান ও মেলা বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সহ সভাপতি গৌত্তম কুমার দত্ত বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচনের আশায় কোণাবাড়ী গ্রামের এই করতোয়া নদীতে স্নান করতে আসেন। তারা আসেন পাপ মোচনের জন্য, দেশ ও জাতির মঙ্ল কামনার জন্য। এবারের গঙ্গাঁ স্নানে হাজারো ভক্ত ও পূণ্যার্থীদের ঢল ছিল। প্রশাসনের সহযোগিতায় স্নান উৎসব সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হচ্ছে।
মন্তব্য করুন