নীলফামারী সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদে প্রধানন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়মের ছবি তুলতে গেলে দৈনিক সমাজ সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক নুরল আমিনসহ চারজন সাংবাদিককে নির্যাতন করেন চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরীসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যার।এ ঘটনায় জেলার সাংবাদিকরা জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরের স্মারকলিপি দিলে ঘটনাকে ভিন্নক্ষাতে প্রবাহিত করে ধামাচাপা দিতে সদর থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির এজাহার দায়ের করেছেন কচুকাটা ইউনিয়নের প্যালেন চেয়ারম্যান মো: মোশফিকুর রহামান।
এছাড়াও মনগড়া এজাহারে দৈনিক বর্তমান কথা পত্রিকার নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি মোঃ হারুন উর রশিদ, গ্লোবাল টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি সোহেল রানা, আজকের দেশকন্ঠ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক,দৈনিক জনতার জেলা প্রতিনিধি এন এম হামিদীর নাম দেওয়া হয়।
এর আগে গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৮ এপ্রিল জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ গণমাধ্যমকর্মীরা মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন। ঘটনার পরদিন সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠ বিচার ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে সাংবাদিক নুরল আমিন সদর থানায় একটি অভিযোগ দেন। সে সময়ে থানা পুলিশ বিষয়টি আমলে না নেওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।মামলা নং- পিটিশন ১৬৯/২০২৪ (সদর)।এরই প্রেক্ষিতে গত (২৪ এপ্রিল) তারিখে রাত আনুমানিক সাড়ে দশটায় সদর থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন প্যানেল চেয়ারম্যান মো: মোশফিকুর রহমান। তার এক ঘন্টার মধ্যে রহস্যজনক ভাবে কোনো রকমের তদন্ত ছাড়াই দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা রুজু করেন নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মো: তানভিরুল ইসলাম।তদন্ত ছাড়াই এজাহার রুজুর বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ওসি মো: তানভিরুল ইসলাম বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে তা রুজু করা হয়েছে।
সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির জেলা সাধারন সম্পাদক ও দৈনিক জনতার জেলা প্রতিনিধি এন এম হামিদী বলেন,কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদে প্রধানন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়মের ছবি তুলতে গেলে দৈনিক সমাজ সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক নুরল আমিনসহ চারজন সাংবাদিককে নির্যাতন করেন চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরীসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী।তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিচার দাবিতে আমিসহ জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যমকর্মীরা মানববন্ধন এবং বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করলে অপরাধীরা তাদের অপরাধ আড়াল করতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকার পরও আমাকেও মিথ্যে মামলায় আসামী করেছে।আমরা এই মিথ্যে মামলা প্রত্যাহারসহ মুল ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আল ফারুক পারভেজ উজ্জ্বল বলেন, সাংবাদিক নুরল আমিন, সোহেল রানাসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া এই মামলা একতরফা ভাবে রুজু করা হয়েছে।
জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন বলেন, সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আহমেদ আবু জাফর পুরো ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন। তিনি বলেন, চাউল চোরদের বিপক্ষে এবং গণমানুষের পক্ষে থাকার কারণে আমাদের সাংবাদিকরা মিথ্যা মামলার শিকার হচ্ছেন। এ থেকে পরিত্রাণ জরুরী। এদেশের সাংবাদিকরা ন্যায়ের পক্ষে আগেও যেভাবে ছিলো ভবিষ্যতেও তারা আরো শক্ত ভুমিকায় থাকবে। কোন চোরের কাছে সাংবাদিকরা হেরে যেতে পারেনা।
মন্তব্য করুন