ছাতক বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিক্রয় বিতরন বিভাগ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে একের এক বেসরকারী বিদ্যুৎ শ্রমিকরা আহত ও মারা যাচ্ছেন। গত ৮ মে বিদ্যুৎ অফিসের কাজে সূফিনগর এলাকায় বিদ্যুতের খুটিতে ১১কেভি লাইনের কাজ করতে গিয়ে ৩৩ কেভি লাইনে শর্ট খেয়ে খুটিতে আটকে যায় বেসরকারী বিদ্যুৎ শ্রমিক মুস্তাকিম।
বর্তমানে মুস্তাকিম রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার পুরো শরির ঝলসে গেছে, অবস্থা আশংকাজনক। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। মোস্তাকিম খুটিতে কাজ করার আগে ১১ কেভি লাইন অফ করলেও ৩৩কেভি লাইন অফ করে নি অফিস কতৃপক্ষ।
এভাবে একের পর এক বেসরকারী বিদ্যুৎ শ্রমিক দূর্ঘটনার শিকার হওয়ার বিষয়টি বিদ্যুৎ অফিসে দায়িত্বহীনতাকে দায়ি করছেন সাধারন মানুষ। তাদের গাফিলতির কারণে মুস্তাকিম মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মুস্তাকিম ছাড়াও উপজেলা আরোও বেশ কয়েকজন বেসরকারী বিদ্যুৎ শ্রমিকরা অফিসের গাফিলতির কারণে মারা গেছেন। এনিয়ে বিভিন্ন প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি অফিস কতৃপক্ষকে।
কয়েক বছর ধরে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে বিদ্যুৎ অফিস। সিন্ডিকেটের নেতৃত্ত্বে অফিসের সকল অনিয়ম, ঘুষসহ নানান দুর্নীতি দামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে, বিদ্যুৎ সেবা গ্রহনকারীরা জানায়।
জানাযায়, ছাতক বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিক্রয় বিতরন বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারী বিদ্যুৎ শ্রমিক হিসাবে কাজ করছেন মোস্তাকিম আহমদ। তিনি কালারুকা ইউনিয়নের রায়সন্তোষপুর গ্রামের শাহ আব্দুল কাদিরের পুত্র ও মুক্তিযোদ্ধা শাহ আব্দুর রহমানের নাতি। গত ৮ই মে কালারুকা ইউনিয়নের সুফিনগর এলাকায় বিদ্যুতের খুটিতে কাজ করতে যান মোস্তাকিম। বিদ্যুতের খুটিতে উঠার আগে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে একটি খুটিতে কাজ করছিলেন। কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ বৈদ্যুতিক শর্ট খেয়ে সে খুটিতেই আটকে যায়। পরে আবার লাইনটি তাৎক্ষনিক বন্ধ করে খুটি থেকে মুমুর্ষ অবস্থা উদ্ধার করে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাকে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য আশংকাজনক অবস্থায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লাইন বন্ধ থাকা সত্ত্বে কিভাবে সে বৈদ্যুতিক শর্ট খেল?
মোস্তাকিম যে খুটিতে কাজ করছিলেন সেই খুটির ১১কেভি লাইনে সাট ডাউন নেয়া হলেও ৩৩ কেভি লাইন সাট ডাউন (বন্ধ) করেননি অফিস কর্তৃপক্ষ। তাই সে বৈদ্যুতিক শর্ট খেয়ে ঝলছে গেছে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এখানে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে,
মুস্তাকিম ছাড়াও ছাতক উপজেলার বিদুৎ উন্নয়ন বিক্রয় ও বিতরন বিভাগের উদাসীনতার কারণে পৌর শহরের বাগবাড়ি গ্রামের মনু মিয়ার পুত্র মোহন মিয়া। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বেতুরা গ্রামের শুকুর আলীর পুত্র ফারুক মিয়া। পৌর শহরের বাগবাড়ী- ইটখলা এলাকার মৃত মজর আলীর পুত্র শামীম আহমদ। ইসলামপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর-গনেশপুর গ্রামের আমিন উদ্দিনের পুত্র শাহ জামাল। বিদ্যুৎ শ্রমিক শাহজাহান মিয়া সহ আরোও অনেকেই পঙ্গু হয়েছেন ও প্রাণ দিতে হয়েছে।
একের পর এক বেসরকারী বিদ্যুৎ শ্রমিক দূর্ঘটনার শিকার হওয়ায় বিষয়টিকে অত্র এলাকার সচেতন মহল কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসীনতাকে দায়ি করছেন। তাদের উদাসীনতার কারণে আজ মুস্তাকিম মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
সহকারী প্রকৌশলী সুমন চৌধুরী, লাইন সহকারী মোস্তাফিজ ও ছোট জাকির
এ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বন করছেন বলে জানা যায়।
আরোও জানাযায়, কয়েক বছর ধরে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে বিদ্যুৎ অফিস। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনিয়ম, মিটার চুরি, ঘুষসহ নানান দুর্নীতি চলছে।
২০২২ সালের ৮ আগস্ট অনিয়ম, মিটার চুরি, ঘুষসহ নানান দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকার বিউবো কর্মচারী পরিদপ্তরের উপপরিচালক রেহানা আক্তার স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই অফিসের তিন কর্মচারীকে বদলি করা হলেও সিন্ডিকেট এখনো বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহকারী প্রকৌশলী সুমন চৌধুরী, লাইন সহকারী মোস্তাফিজ, ছোট জাকির এর নেতৃত্বে অফিসের সকল অনিয়ম, ঘুষসহ নানান দুর্নীতির মূলহোতা বলে জানান ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ সেবা গ্রহণকারী গ্রাহকেরা।
এবিষয়ে মুঠোফোনে জানতে সহকারী প্রকৌশলী সুমন চৌধুরী বলেন আমার উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে এবিষয়ে আফিসে এসে জেনে নিন, তিনি আরো বললেন আমি এসব বিষয়ে জানিনা এবং আমি কোন সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত না। লাইনম্যান সাট ডাউন নিয়েছে ১১ কেভির: ৩৩ কেভির নিয়েছে কি-না আমার জানা নেই।
আপনি কি এ দায় এড়াতে পারেন তার কাছে জানতে চাইলে তিনি আবারও বলেন আমার উর্ধতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
Exen Pdb Chattak (ত্বথ্যানধায়ক প্রকৌশলী)’র মুঠোফোন কল দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মুস্তাকিম আমাদের কোন কাজে পোলে উঠে নাই সে আমাদের কিছু না জানিয়ে তার ব্যাক্তিগত কাজে পোলে উঠেছিল এবলে সে মিটিং এ আছে বলে তড়িঘড়ি করে মোবাইল ফোন কেটে দেয়।
মন্তব্য করুন