নওগাঁয় জাল সনদে দীর্ঘ এক যুগ ধরে চাকরি করা সেই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ নির্দেশ দিয়েছেন এনটিআরসি-এ। এর পূর্বে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে এক যুগ চাকরি অভিযোগ শিরোনাম সহ নানা শিরোনামে কয়েকটি মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা কর্মকর্তাগণ। নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমানের নির্দেশে ঐ শিক্ষিকার সনদ যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। অবশেষে যাচাইয়ের পর নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার মালশন গিরিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক মোছাঃ ময়না খাতুনের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল বলে প্রমাণিত হয়।
জানা যায়, শিক্ষক ময়না খাতুন ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে পাস করা একটি ভূয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরিতে নিয়োগ নিয়েছিলেন। তিনি ঐ বিদ্যালয়ে ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর বাংলা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেয়। এরপর তিনি ২০১১ সালের ১ মে বিএডসহ এমপিওভুক্ত হোন। তিনি জাল সনদ দিয়ে নিয়োগ পেয়ে এক যুগ থেকে সরকারি কোষাগার থেকে অবৈধ্য ভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ২৩ লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করেছেন বলে জানা যায়। সেই সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন উজ্জ্বল কুমার। যিনি এখনও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার হাতেই নিয়োগ হয়েছিল এই শিক্ষিকা ময়না খাতুনের। উল্লেখ্য যে, গত ২১ মে বে-সরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এনটিআরসিএ এর সহকারী পরিচালক ফয়জার আহমেদ স্বাক্ষরিত সনদ যাচাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, রেকর্ডদৃষ্টে দেখা যায়, ৫১০১০০৫১ রোল ও ৭০০৬০৮১ নম্বর প্রত্যয়ন পত্র ধারী রেকর্ডদৃষ্টে নিবন্ধন প্রার্থীর শিক্ষক নিবন্ধন সনদ রেকর্ডদৃষ্টে জাল/ভুয়া মর্মে দলিল পৃষ্ঠে প্রতীয়মান হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়ের পূর্বক অত্র অফিসকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ঘটনার বিষয়ে জানতে জাল সনদধারী শিক্ষিকা’র মুঠোফোনে কল দিলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এবিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল কুমার সরকারের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি কোন মন্তব্য করবেন না বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে আমি ঐ শিক্ষিকার সব কাগজপত্র চেয়ে চিঠি করেছিলাম। এরপর সে তার কাগজপত্র জমা দিলে সেগুলো যাচাইয়ের জন্য পাঠিয়ে ছিলাম। যাচাই শেষে ঐ শিক্ষিকা’র শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল বলে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দিয়েছে এনটিআরসিএ। এখন সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে চাকরি করা ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন