শ্রমিক সংকটের মধ্যে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৃষকদের মধ্যে আশার আলো হয়ে এসেছে অত্যাধুনিক ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মেশিন কম্বাইন্ড হারভেস্টার।
চলতি বোরো মৌসুমে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হলেও শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়েন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
অতিরিক্ত মূল্য দিয়েও যখন মিলছে না শ্রমিক তখন হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে এ অঞ্চলের কৃষকরা রাত-দিনে ধান কেটে ঘরে তুলছেন। এতে শ্রমিক সংকট মেটানোর পাশাপাশি ধান উৎপাদন খরচও কমে এসেছে।
জানা গেছে, প্রতিবছর ইরি ও বোরো ধান কাটার শাহজাদপুরে শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদার পাশাপাশি বেড়ে যায় পারিশ্রমিকও। এতে বোরো ধান উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এজন্য কৃষকের দুশ্চিন্তা লাঘবে আনা হয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন।
মেশিনটি অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারে। শুধু রোদে শুকিয়ে ধান ঘরে তুলতে হয়।
কম্বাইন্ড হারভেস্টার চালক আব্দুল মুন্নাফ বলেন, এ মেশিন দিয়ে খুব সহজেই এখন ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকরা। প্রতি ঘণ্টায় দুই থেকে তিন বিঘা জমির ধান কাটা যাচ্ছে। এতে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ লিটার তেল খরচ হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা নিচ্ছি।
উপজেলার জুগনিদহ গ্রামের জামাল উদ্দিন জানান শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে পাঁচ থেকে সাতজন শ্রমিক সারা দিনে এক বিঘা জমির ধান কাটতে পারেন। তাতে বিঘা প্রতি খরচ হয় পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা।মেদহীন দিয়ে ধান কাটলে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে কাটা এবং মাড়াই সহ ধান বিএসটা বন্দি করে বাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। এতে অর্থ ও সময় দুই ই সাশ্রয় পাওয়া যায়।
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ বলেন, এবছর প্রায় ২২ হাজার ৮০০হেক্টর জমিতে বোরো ধারের চাষ হয়েছে। উপজেলায় ১৭ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মেশিনের দাম ৩০-৩২ লাখ টাকা। সরকার প্রতিটি মেশিনের ওপর ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সহ ৪৫ টি মেশিন এ উপজেলায় ধান কাটছে। মেশিনের সাহায্যে ধান কেটে ও মাড়াই করে শুধুমাত্র রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলতে হয়। চালক অভিজ্ঞ হলে ঘণ্টায় এক একর জমির ধানও কাটা সম্ভব। এছাড়া জমিগুলো সমতল হলে আরও বেশি ধান কাটা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন প্রতিবছরই বোরো ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। এ কারণে সময় মতো ধান ঘরে তুলতে না পেরে বৃষ্টি ও অকাল বন্যাতে কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে যায়। এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে স্বল্প খরচে ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন