ভারি বৃষ্টি ও অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির কারণে উল্লাপাড়ায় ৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক। অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ার কারণে মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে। পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক রাস্তা ও স্কুলের মাঠ। পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্টে যেতে হচ্ছে বিদ্যালয়ে আবার অনেকে যেতে পারছে না।
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সময় মতো না আসায় পাঠদান নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে স্কুলে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা। এতে অনেক সময় ভিজে যায় পরনের কাপড় ও নষ্ট হয় বই-খাতা।
যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আরও বিদ্যালয় পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পানিবন্দি থাকা উধুনিয়া ইউনিয়নের দত্ত পংখারুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থী আসলাম হোসেন জানায়, প্রতিদিন তার বাবা নৌকাযোগে তাকে স্কুলে রেখে যায় আবার স্কুল ছুটি হলে তার বাবা নিয়ে যায়।
উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের ভেন্নাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুস ছালাম বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে হাঁটু পানি থাকায় ছোট্ট শিশুদের বিদ্যালয়ে আসতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক শিশু সাঁতার জানে না তাছাড়া বন্যার পানিতে সাপের ভয় রয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠ, রাস্তাসহ চারিদিকে পানি থাকায় পাঠদান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানিবন্দি বিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি থাকায় বাচ্চাকে একা বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় লাগে তাই বাচ্চাকে স্কুলে রেখে যেতে হয় আবার বিদ্যালয় ছুটি হলে নিয়ে যেতে হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত সে বাড়িতে না ফেরে ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবারের সবাই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন বলে অভিভাবকরা জানায়।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষার পানি থাকায় সময় মত স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসতে পারেন না। বেশিরভাগ সময় স্কুলে যাওয়ার পথে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় ভাড়া নৌকার জন্য। সরকারি উদ্যোগে নৌকার ব্যবস্থা করা হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুব্যবস্থা হবে।
পানিবন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ছানোয়ার হোসেন জানান, ‘উপজেলায় ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে আছে। বিদ্যালয়ের পাঠদান কর্মসূচী চলমান রয়েছে। এসব স্কুলে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো আতাউল গনি ওসমানী জানান, ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক পানিবন্দি হয়েছে তবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার যে কার্যক্রম তা চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন