শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে সার্জন নাই প্রায় ৪-৫ বছর তবুও চলছে হাসপাতাল, সেবা গ্রহিতা খামারী ও পশুপালনকারীরা পাচ্ছে যথাযথ চিকিৎসা সেবা। ভেটারিনারি সার্জনের দ্বায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ফারুক হোসেন নিজেই। উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরের জমির পরিমান ৭৯.৫৬শতক, রয়েছে নতুন একটি ভবন সহ পরিত্যাক্ত একাধিক ভবন ও কোয়ার্টার। ভেটারিনারি সার্জনের বাসভবন নেই, নেই সহকারিদেরও বাসস্থান। আগে সাজানো গোছানো প্রানী সম্পদ বিভাগের পুরাতন ভবনগুলোও পরিত্যাক্ত। ল্যাব ও ইনস্ট্রুমেন্টস এর অপর্যাপ্ততা রয়েছে। তবু থেমে নেই চিকিৎসা কার্যক্রম।
উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ফারুক হোসেনের সাথে আলাপচারীতাকালে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রদেয় সকল সুবিধা পাচ্ছি, স্থানীয় সাংসদ মহোদয় একেএম এনামুল হক শামীম স্যার ও আমাদের খোঁজ খবর রাখছেন। পদ্মা সেতুর কারনে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থায় এই অঞ্চলের খামারীরা স্বর্নযুগে প্রবেশ করলো। নড়িয়ায় বর্তমানে গরুর খামার রয়েছে ১০৫০ টি, বয়লার মুরগীর ফার্ম রয়েছে ৩৬৮, লেয়ার মুরগীর ফার্ম ১১টি, সোনালী মুরগীর ফার্ম ৭৯টি হাঁসের ফার্ম ১৮টি, ছাগালের খামার ৬২ টি এবং ভেড়ার খার রয়েছে ৪টি। এখানকার খামারীরা খুবই পরিশ্রমী তবে খামারের বর্জ্য বা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থাপনার বিষয়ে বেখেয়ালি, আমি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নড়িয়াতে দ্বায়িত্বপালনের জন্য যোগদান করার পর থেকে চেষ্টা করছি খামারগুলোর ময়লা আবর্জনা বর্জ্য ও পশুর পয়ঃনিষ্কাশনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে খামারীদের উদ্বুদ্ধ করতে, পাশাপাশি মাংস ব্যবসায়ীদের কসাইখানায় পশু জবাই করার পূর্বে খোঁজখবর নিচ্ছি, তাদের কে বিভিন্ন রকম ট্রেইনিংও করাচ্ছি। নড়িয়া উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরে কি পরিমান জনবল থাকার কথা ও বর্তমানে কতোজন দ্বায়িত্বরত আছেন এবং অন্য কোন কিছুর অভাব রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ডাঃ ফারুক হোসেন দুসস কে জানান, আমাদের এখানে বর্তমানে দ্বায়িত্বরত আছি আমি সহ ০৭(সাত) জন, তবে ১১ জন থাকার কথা, ০৪(চার) জনের পদ শূন্য, তবে ইতিমধ্যে ০৩ জনের সরকারি নিয়োগ প্রকৃয়া চলমান রয়েছে, অপর ০১(এক)জন ভেটারিনারি সার্জন পদ কবে নাগাদ নিয়োগ হবে জানি না, ভেটারিনারি সার্জন বিসিএস নিয়োগ হয়। আপাতত ভেটারিনারি সার্জনের দ্বায়িত্বটা আমাকেই পালন করতে হচ্ছে। এমনিতে আমাদের সকল কিছুই যথাযথভাবে চলছে তবে জরুরী ভিত্তিতে একটি ল্যাব ও কিছু ইনস্ট্রুমেন্টস প্রয়োজন, আমি আমার জেলা কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি, আশা করছি খুউব দ্রুত পেয়ে যাবো।
সেবা নিতে আশা গবাদিপশুর মালিক ও খামারীদের বেশ কয়েকজনের সাথে চিকিৎসা সেবার।মান সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, আমরা যখন আসি তখনই সাথে সাথে বড়ো স্যারের সাথে সরাসরি কথা বলে ঔষধপত্র নেই, স্যার না থাকলে বাকি স্যারেরা আমাদের খুবই সহযোগিতা করে, আমাদের খামার দেখকে মাঝে মধ্যেই যায়, একজন দুধ বিক্রেতা জানান, আমরা তো গরিব মানুষ, বাজারে দুধ বিক্রি করতে গেলে যদি কোন পাইকার জোড়াজুরি করে বা ন্যায্য বাজার দর দিতে না চায় তাইলে স্যারের কাছে জানাইলে স্যারে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়। অপর এক বৃদ্ধ বলেন পশু হাসপাতাল থাকায় সরকারি ঔষধ নিতে পারি, স্যারেগো আচরন নিজের বাড়ির আত্মীয়স্বজনদের মতোন, আমাগো খুবই সমীহ্ কইরা বুঝাইয়া কথা কয়।
সবচেয়ে গুরুত্ববপূর্ন পদ ভেটারিনারি সার্জন, যিনি রেসিডেনসিয়াল চিকিৎসক হিসেবে থাকেন এ পদটি পূরন সহ একটি ল্যাব ও কিছু প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট সংযোজন হলে উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক শতভাগ কার্যক্রম তরান্বিতো করা সম্ভব।
মন্তব্য করুন