দুই চোখ যে দিকে যায়, শুধু পানি আর পানি। গ্রামগুলো যেন পানিতে ভাসছে। দিগন্ত জুড়ে স্বচ্ছ জলরাশি। তাতে খেলা করছে ছোট-বড় ঢেউ। সেই ঢেউ ভেঙে ছুটে চলেছে ছোট-বড় নৌকা ও পিচবোর্ড। পিচবোর্ড ও নৌকাগুলো এই বিল থেকে ঐ বিল পাড়ি দিয়ে ফিরছে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে। রাস্তার দু পাশে বসেছে হরেক রকমের খাবারের দোকান ও বাচ্চাদের খেলনার দোকান। রাস্তার কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে উধুনিয়া আধুনিক শিশু পার্ক। সব মিলে যেন প্রতিদিনি মেলায় পরিণত হয়। শরতে নীল আকাশ সেখানে এসেছে এ এক অন্য রকম মাদকতা। আর সেই স্বাদ নিতে প্রতিদিনি উধুনিয়ায় ছুটে আসছেন অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু মানুষ। ভ্রমণপিপাসুরা এ উধুনিয়া কে নামকরণ করেছেন উধুনিয়া মিনি কক্সবাজার। মনোমুগ্ধকর মিষ্টি বাতাস, মেঘের ছুটে চলা ও পানির ওপর ঢেউয়ের দৃশ্য, দ্বীপের মত গ্রাম নজর কেড়েছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে উধুনিয়ার মিনি কক্সবাজারের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। এসেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক সংঠনের শিক্ষা ও আনন্দ ভ্রমণের নৌকা। নৌকার উপরে চলছে গান- বাজনা ও নাচ। অনেকেই আবার নৌকা থেকে ঝাঁপিয়ে বিলের পানিতে গা ভিজিয়ে গোসলও সেরে নিচ্ছে। শিশুরা শিশু পার্কে প্রবেশ করছে। বিলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়ক ও ব্রিজ যেন বিনোদন স্পট। প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে উধুনিয়া মিনি কক্সবাজারে। দেখা যায়, পড়ন্ত বিকালে ভ্রমণপিপাসুদের উপচে পড়া ভীর।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষার মৌসুমে সিরাজগঞ্জ সদর, কামারখন্দ, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, সিংড়া, গুরুদাসপুর সহ বিভিন্ন উপজেলার ভ্রমণপিপাসুরা উধুনিয়া মিনি কক্সবাজারে এসে আনন্দ উপভোগ করেন। সিংড়া ও গুরুদাসপুর থেকে বেড়াতে আসা কয়েকজন জানান, চলনবিল অধ্যাষিত এই বিলের পরিবেশ অনেক সুন্দর ও অনন্য একটি বিনোদন স্পট। এখানে নৌকা ভ্রমণ করতে অনেক ভালো লেগেছে তাদের। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে পানি আর মাঝের গ্রামগুলো। গ্রামগুলো দ্বীপের মত দেখতে। গ্রামগুলোর চারপাশে ইটের গাঁথুনি থাকায় পানির আঘাতে মাটি ভেঙে যায় না। অনেকটাই পরিকল্পিতভাবে বানানো হয়েছে বলে মনে হয়েছে। তাছাড়া এ বিলে রয়েছে পিচবোর্ড, বাচ্চাদের শিশু পার্ক ও ভাসমান জলভাঙ্গা কপি হাউজ।
এ বিলের নৌকার মাঝি ছাত্তার ও হাকিম জানান, বর্ষায় এই বিলে নৌকা চলে। প্রতিদিন তাদের এক হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। তবে শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে দর্শনার্থী বেশি আসায় তাদের আয়ও বেশি হয়।
মন্তব্য করুন