সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌর আর,এস এলাকার নয়ানগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আরজুমান্দ সরকারি চাকুরির নির্ধারিত নির্দেশিত বয়স গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযদ্ধা কোঠায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরিটি বগিয়ে নেন বলে জানা যায়। আরজুমান্দ বয়স গোপন করে যোগদান করায় প্রকৃত নির্ধারিত বয়সের চাকুরি প্রত্যাশী প্রার্থী অনেককেই বঞ্চিত করা হয়েছে বলে সচেতন গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা বলেন।
এই শিক্ষিকার প্রকৃত জন্ম ১লা মার্চ ১৯৭৬ সালে হয় তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। সরেজমিনে স্কুলে গেলে শিক্ষিকা আরজুমান্দ তাহার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখালে দেখা যায় তার জন্ম ০৩ জানুয়ারী ১৯৮৪ ইং। তাহার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার ৮৮১১৪২০০০০৮২। পিতা- মো. আজাহার আলী, মাতা- মোছা. সুফিয়া খাতুন, পেশা সরকারী চাকুরী।
আরজুমান্দ বলেন ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৬ইং সালে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। অথচ জাতীয় পরিচয় পত্র (ভোটার আইডি) অনুযায়ী ০৩ জানুয়ারী-১৯৮৪ইং জন্মগ্রহন করেন,হাস্যকর বিষয় হচ্ছে এই শিক্ষিকার ০২ বৎসর বয়সে বিয়ে হয়, এবং ০৭ বৎসর বয়সে ১ম এক পুত্র সন্তানের “মা” হন। এমন ঘটনা বাংলাদেশের জন্য খুবই বিরল, এমন ঘটনা দ্বিতীয় আর কেউ আছে বলে জানা যায়নি।
তার প্রথম সন্তান আরিফুর রহমানের জাতীয় পরিচয় পত্রে (ভোটার আইডি)’তে দেখা যায় ০২ জানুয়ারী ১৯৯১ইং সালে জন্ম, এই হিসাব অনুযায়ী প্রায় ০৭ বৎসর বয়সে আরজুমান্দ প্রথম মা হয়।
আরজুমান্দ জানায় দ্বিতীয় সন্তান এর জন্ম হয় ১৫ জানুয়ারি ১৯৯৭ইং তারিখে।
এসএসসি কত সালে পাস করেছেন জানতে চাইলে, তিনি জানায় ১৯৯৮ইং শিক্ষা বর্ষে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ২০০২ইং শিক্ষা বর্ষে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি বলেন প্রকৃতভাবে আমার বয়স বেশি হলেও মনে খুব ইচ্ছে ছিল আমি প্রাইমারীতে শিক্ষাকতা করবো।
কতো সালে আপনি এই চাকুরি পান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ইং তারিখে মুক্তিযুদ্ধা কোঁঠায় তিনি কামারখন্দের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম নিয়োগ পান।
১৯৭৬ইং সালে আপনি জন্ম গ্রহণ করেন জাতীয় পরিচয় পত্রে(ভোটার আইডিতে) ১৯৮৪ সালে জন্ম নিবন্ধ কিভাবে করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে অনেক কাহিনী অনেক কথা বলে শেষ করা যাবে না। এবিষয়টি অতি গোপন আমার পরিবারের মানুষ ছাড়া আমার সহকর্মিরাও জানেন না।
আরজুমান্দ বয়স গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকুরিতে যোগদানের বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার সচেতন মহলে নানান রকম গুঞ্জন ও টিস্টলে চায়ের টেবিলে এবিষয়টি আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
অনেকেই বলছেন তথ্য গোপন ও বয়স বিকৃত করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চাকুরির শুরুতেই যারা এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ করে, তাদের মধ্যে সবসময় অপরাধপ্রবণতাই কাজ করে এমন কথাও অনেকে বলছেন।
এবিষয়ে নয়ানগঞ্জ সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি অল্প কিছুদিন বদলি হয়ে এসেছি এতোকিছু এখনো জানি না, তবে যদি এরকম ঘটনা যেই করুক না কেন এমন অপরাধে জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন।
এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব সানোয়ার হোসেন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন আমাকে একটি দিন সময় দিবেন আমি ঐ টিচারকে আমার অফিসে ডেকে ওনার কাছে সকল বিষয় বিস্তারিত শুনে আপনাাকে জানাবো। যথারীতি একদিন পর শিক্ষা অফিসার মোবাইল ফোনে বলেন, টিচারের কাছে উক্ত বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে উনি সকল বিষয় গুলো অস্বীকার করেন বলে জানান।
মন্তব্য করুন