বরগুনা সদর উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার অভিযোগ। এতে ঘটনাস্থলে নারীসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। আহতরা হলেন, মৃত্যু নয়া মিয়ার স্ত্রী মোসাঃ রোকেয়া বেগম (৬৫), মোঃ এমাদুলের স্ত্রী মোসাঃ রোকসানা বেগম (২৮), মোঃ রাসেল এর মেয়ে বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মোসাঃ রিমি বেগম (১৭), মোঃ রিপনের পুত্র বধু মোসাঃ লামিয়া, মোঃ এমাদুল হক এর মেয়ে মোসাঃ ঐশী আক্তার (০৯)।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি বরগুনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান নিশ্চিত করে বলেন, মারধরের অভিযোগে মোঃ এমাদুল হক (৩২) বাদী হয়ে দুই জনের নাম উল্লেখ করে করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ কারিরা হলেন, একই এলাকার মৃত্যু হাজী নয়ন খা এর ছেলে মোঃ শাহ্ আলম (আলমগীর খা) (৫০), মোঃ শাহ্ আলম (আলমগীর খা) এর স্ত্রী মোসাঃ লাইজু বেগম (৩৫)।
সদর থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলা সদর ইউনিয়নের কালিরতবক এলাকায় গত ০৩ অক্টোবর দুপুর সারে বারোটায় উভয়ের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপরে এই মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
আরো জানা যায়, পূর্ব থেকেই জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় বিভিন্ন সময়ে খুন জখমের হুমকি প্রদান করিয়া আসিতেছে। ঘটনার দিন মোসাঃ রোকেয়া বেগম তাহার বসত বাড়ি হইতে কালিরতবক বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করিয়া আলমগীর এর বাড়ির সামনে আসলেই আলমগীর ও তার স্ত্রী দা ও লাঠিসোটা নিয়ে পথরোধ করিয়া তাকে এলোপাতাড়ি ভাবে কিল ঘুসি মারিয়া বিভিন্ন স্থানে জখম করে। ডাক চিৎকার শুনিয়া মোসাঃ রোকসানা বেগম ও রিমি বেগম ঘটনাস্থলে রোকেয়া বেগমকে উদ্ধারের চেষ্টা করিলে তাদেরকেও এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে আহত করা হয়। এবং কাপড়-চোপড় ধরে টানা হেঁচড়া করিয়া চিড়ে ফেলে শ্লীলতাহানি ঘটায়।
পরবর্তীতে খবর পেয়ে পরিবারের মোঃ রিপন (৪৫), মোসাঃ আয়সা বেগম (৫০), মোঃ বাবুল সিকদার (৬৫) ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহোযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে আনলে ডাঃ তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পন্ন করে সুস্থতার জন্য ভর্তি দেয়।
স্থানীয় মন্নান হাওলাদার বলেন, স্থানীয় ভাবে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের জমি জমা অবৈধ ভাবে ভোগ-দখল করাই তার একটি নেশা। আমরা আলমগীরের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এমন কি মা- বোন, শিশুরাও তার অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পায়নি। আমরা সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
আহত কলেজ ছাত্রী রিমি বেগম বলেন, সেদিন আমি শুনি রাস্তার উপর মানুষের হৈ- চৈ সেখানে আমি এবং রোকসনা গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আলমগীর আমাদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আমার পোশাক ছিড়ে ফেলায় আমি ইজ্জত বাঁচাতে মাটির উপর শুয়ে পড়ি। দুই স্বামী-স্ত্রী মিলে আমাকে নির্মম ভাবে অত্যাচার করেছে। আমাদের বাঁচাতে এলে তাদের উপরও অত্যাচার শুরু করেন। আমরা এই সন্ত্রাসের সুষ্ঠু বিচার দ্বাবি করছি।
মোঃ এমাদুল হক বলেন, আমারা দীর্ঘ বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছি এই আলমগীরের কাছ থেকে। স্থানীয় ভাবে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমাদেরকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করতো আমরা তাই কোন কথা বলতাম না। আমরা শ্রমিকের কাজ করায় বাড়িতে কোন পুরুষ পোলা না থাকায়। সেদিন অতর্কিত হামলা চালিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেছে আমাদের পরিবারের মুরুব্বি, যুবতী, শিশু শিক্ষার্থী সহ ৫ জনের উপর।
এ বিষয় বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুল হালিম বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। এই মামলার এক নং আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন