আমাদের সমাজে প্রতিহিংসাপরায়ণতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে রয়ে গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা প্রতিহিংসাকে বিদায় দিয়ে হিংস্রতাকে জায়গা করে দিয়েছি। এটা যেন আমাদের দৈনন্দিন আচরণ ও কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হচ্ছে। যেখানে মতপার্থক্যকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার কথা ছিল, সেখানে এখন অসহনশীলতা ও আক্রমণাত্মক মনোভাবই মুখ্য হয়ে উঠেছে।
প্রতিহিংসার মানসিকতা একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বা গোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়। এটি আমাদের ভেতরের নৈতিক মূল্যবোধের সংকটের ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু হিংস্রতা এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে সমাজের স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জ করে। আজকের সমাজে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও আমরা এমন অনেক দৃষ্টান্ত দেখছি যেখানে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
এই পরিবর্তন কেন? প্রতিহিংসা হয়তো ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, কিন্তু হিংস্রতা একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। সমাজের বিভিন্ন স্তরে অসহনশীলতা ও সাম্যবাদিতার অভাব, ক্ষমতা লিপ্সা এবং নৈতিক নেতৃত্বের ঘাটতি আমাদের হিংস্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমও এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে, যেখানে মতবিরোধকে হিংস্রভাবে প্রকাশ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আমাদের উচিত এই হিংস্রতাকে বিদায় জানিয়ে আলোচনা, বোঝাপড়া এবং সহনশীলতার পথ খুঁজে বের করা। সমাজের প্রতিটি স্তরে শক্তির পরিবর্তে ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তবেই আমরা একটি সুস্থ, স্থিতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে পারব, যেখানে হিংসা নয়, ভালোবাসা ও সহানুভূতির জয় হবে।
মন্তব্য করুন