ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঘিরে দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল বিপুল। কিন্তু সেই প্রত্যাশা এখন হতাশায় রূপ নিয়েছে। দেশে জঙ্গী উত্থান, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি, প্রশাসনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মতো সমস্যাগুলি সমাজের স্থিতিশীলতাকে ভেঙে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি, স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের কোণঠাসা করা এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের উসকে দেওয়ার ঘটনা দেশের ভবিষ্যতের জন্য এক অশনি সংকেত।
জঙ্গী উত্থান দেশের নিরাপত্তার জন্য বিশাল হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলোর পুনরুত্থান জাতীয় সংহতি ও নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ ধরনের উগ্রবাদী গোষ্ঠী শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক তৈরি করছে না, পাশাপাশি সামাজিক সম্প্রীতিতেও আঘাত হানছে। প্রশাসনের অদক্ষতা এবং দুর্বলতা এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়াও আইনের শাসনের অভাবের ইঙ্গিত দেয়।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলেছে। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা যে কতটা দুর্বল, তা বাজার পরিস্থিতি প্রতিদিনই প্রমাণ করছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে গেছে বা অগ্রগতি নেই, যা জনকল্যাণের ধারনাকে ক্ষুন্ন করেছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর উত্থান এবং তাদের প্রতি সরকারের নমনীয় মনোভাব। স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের কোণঠাসা করে, স্বাধীনতা বিরোধীদের উসকে দেওয়া সরকারের জন্য একটি রাজনৈতিক ভুল হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। দেশের স্বাধীনতা অর্জনকারী প্রজন্ম এবং বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের এই অবহেলা তাদের মনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং জাতীয় পরিচয়ের ওপর প্রভাব ফেলছে।
সরকারের প্রশাসনিক শৃঙ্খলার অভাব, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রবেশ করেছে, যার ফলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থমকে আছে। প্রশাসনের মধ্যে শক্তিশালী কমান্ডের অভাব এবং স্বচ্ছতার অভাবে সরকার জনসমর্থন হারাচ্ছে।
সব মিলিয়ে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময়। দেশের স্বাধীনতার চেতনা রক্ষার জন্য সরকারের উচিত জাতীয় ঐক্য এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।
মন্তব্য করুন