সম্প্রতি ড. শওকত আলীকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে, তার এই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ তিনি কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং লিখিত খাতায় নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এক অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
একজন শিক্ষাবিদ ও দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে, যখন তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল দায়িত্ব হচ্ছে সমাজে জ্ঞান ও মূল্যবোধের বিস্তার ঘটানো, এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাছে স্বচ্ছতা ও সততা অপরিহার্য।
ড. শওকতের মতো একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য পদে থাকা শিক্ষার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই নৈতিকতার অবক্ষয়ের অভিযোগ রয়েছে, এবং এর সঙ্গে যদি নেতৃত্ব পর্যায়ে দুর্নীতির ছোঁয়া যুক্ত হয়, তাহলে শিক্ষার পরিবেশ পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমরা জানি যে একজন ব্যক্তি অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত আইনের চোখে নির্দোষ। তবে, গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার সন্দেহ বা অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষাব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা নিশ্চিত করতে সরকারের উচিত হবে এই ধরনের অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা এবং অভিযুক্তদের বিষয়ে দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব এমন এক জায়গায় হওয়া উচিত যেখানে নৈতিকতা, সততা ও জ্ঞানচর্চা সর্বাগ্রে থাকে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার পরিবেশকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন