“আগে যারা ছিল তারা সবাই শয়তান ফ্যাসিস্ট, আর এখন যারা চালাচ্ছে সবাই সনদপ্রাপ্ত ফেরেশতা”—এই উক্তিটি সমাজের একটি ব্যঙ্গাত্মক বাস্তবতা তুলে ধরে। আমরা প্রায়শই দেখি, যখন কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিবর্তন ঘটে, তখন নতুন নেতৃত্ব পুরাতনের ওপর দোষারোপ করে তাদের খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরে। আর যারা নতুন আসে, তারা নিজেদের ‘সনদপ্রাপ্ত ফেরেশতা’ হিসেবে উপস্থাপন করে। এমন ধারণা আসলে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং মানুষের মধ্যে বিভাজন বাড়ায়।
ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব সমাজে এই প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যেখানে একপক্ষ অন্যপক্ষকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বা ‘শয়তান’ হিসেবে চিত্রিত করতে ব্যস্ত, সেখানে নিজেদের পক্ষকে ‘ফেরেশতা’ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোনো মানুষ বা গোষ্ঠীই পরম নিখুঁত নয়। অতীতে যারা নেতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন, তারা ভবিষ্যতে উদাহরণ হতে পারেন, আবার বর্তমানের তথাকথিত ‘ফেরেশতা’ সময়ের সাথে সাথে সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন।
এজন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিরকালীন ‘ফেরেশতা’ বা ‘ফ্যাসিস্ট’ হিসেবে ধরে নেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। মানুষ এবং তাদের কর্মের মূল্যায়ন সবসময় পরিবর্তিত হতে পারে এবং সেটি নির্ভর করে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সময়ের চাহিদা এবং মানুষের উপলব্ধির ওপর। তাই একতরফা চিন্তাভাবনার পরিবর্তে সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা আমাদের সবার জন্যই জরুরি।
মন্তব্য করুন