নতুন সরকার মানেই নতুন পরিকল্পনা, নতুন প্রতিশ্রুতি, এবং নতুন আশার সঞ্চার। কিন্তু বাস্তবতা কি সেই আশার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে? বর্তমান সরকারের শাসনামলে সাধারণ মানুষের জীবনে যে পরিবর্তনগুলো প্রত্যাশিত ছিল, তা আদৌ আসছে কি? নাকি “নতুনত্ব” বলতে আমরা কেবল মূল্যবৃদ্ধি আর ক্রমবর্ধমান সংকটের নতুন অধ্যায় দেখছি?
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দিনকে দিন বেড়েই চলছে। তরকারির বাজারে প্রতিটি পণ্যর দাম আকাশচুম্বী। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে সবজি কেনা এখন সাধারণ মানুষের জন্য স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার প্রাথমিকভাবে বাজার স্থিতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। দামের এই ঊর্ধ্বগতি শুধুমাত্র শহরে নয়, গ্রামাঞ্চলেও সমানভাবে প্রভাব ফেলেছে।
এভাবে চলতে থাকলে কতদিন সাধারণ মানুষ এই চাপ সহ্য করতে পারবে? একটি পরিবারের দৈনন্দিন ব্যয় বেড়ে গেছে, কিন্তু তাদের আয় সেই হারে বাড়েনি। এতে করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। বর্তমান সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি এখনো ঠিকমতো করতে পারছে না, যা সরকারের নতুনত্বের ওপর বড় ধরনের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
শুধু বাজারের অস্থিতিশীলতা নয়, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের সঙ্কট আরও গভীর হয়েছে। প্রতিদিন ৮-১০ বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনা সাধারণ মানুষের জীবনে নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ব্যবসা বা কৃষিকাজ করেন, তারা এই সঙ্কটে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নতুন সরকার উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিলেও, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। বরং বিদ্যুৎ সঙ্কট গ্রামাঞ্চলে আরো বেশি ভোগান্তি নিয়ে এসেছে।
সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ তা হলো বেকারত্বের হার ও মানুষের আয় রোজগারের সমস্যা। নতুন সরকারের আমলে বেকারত্বের হার কমার কথা থাকলেও, তা উল্টো বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজের সুযোগ কমে আসছে, ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলোর আয় সংকুচিত হচ্ছে। একদিকে চাকরির বাজার সংকুচিত, অন্যদিকে মানুষের আয় রোজগার কমে যাওয়ায় জীবনযাত্রার মানও নিচে নেমে যাচ্ছে।
প্রতিটি সরকারের উচিত তাদের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। নতুন সরকারের আমলে “নতুনত্ব” কেবল একটি শ্লোগান হয়েই রয়ে গেছে। মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সঙ্কট, এবং বেকারত্বের মতো গুরুতর সমস্যাগুলো নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকারের দায়িত্ব হলো সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। শুধুমাত্র নীতিগত পরিবর্তন নয়, বাস্তবিক সমস্যা সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় ব্যর্থতার দায় পদত্যাগ করুন।
মন্তব্য করুন