বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জগতে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের নামটি একটি বিতর্কিত পরিচিতি ধারণ করেছে।
তিনি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান।
তবে তার ব্যবসায়িক নীতি এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার সমন্বয় নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে।
তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে যা প্রমাণ করে যে তিনি সময় এবং সুযোগের ভিত্তিতে তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করেন।
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের পরিবার তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যে সরাসরি জড়িত।
তার স্ত্রী কোম্পানীর পরিচালক বড় মেয়ে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, এই মেয়ের জামাই সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডির দায়িত্ব পালন করেছেন ছোট মেয়ে এবং ছোট মেয়ের জামাই পরিচালনায় জড়িত।
এই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি দুটো পরিবারকেন্দ্রিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এর ফলে অর্থ লোপাটি তাদের আর বাধা দেওয়ার কেউ নেই বিভিন্ন সময়ে যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল, তিনি এবং তার পরিবার সেই দলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস এক সময় জাতীয় পার্টির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে নিজে দাবি করলেও, তার সাম্প্রতিক কার্যকলাপ এরপর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তিনি বিএনপি বনে যান এবং আওয়ামীলীগের তার আওয়ামী লীগের সাথে সক্ষতা গড়ে তুলে ২০১৩ সালে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লাইসেন্স বাগিয়ে নেন। ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী সাথেও সম্পর্ক সম্প্রসারিত করেছেন ।
ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে তার রাজনৈতিক অবস্থানের এই পরিবর্তন অনেকেই তার সুবিধাবাদী মনোভাবের ইঙ্গিত হিসেবে দেখেন।
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ হলো, তিনি তার দুইটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন। এসব আর্থিক অসংগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, তার প্রভাবশালী রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে কোন সঠিক তদন্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তার পরিবার-নির্ভর পরিচালনার কাঠামো এবং রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এই আর্থিক কারসাজির সাথে সরাসরি জড়িত বলে অনেকে মনে করেন।
বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামাত ইসলামী—এই তিনটি ভিন্ন দলের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজের স্বার্থে রাজনীতির ব্যবহার করেছেন। এমন এক সময়ে যখন দেশের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা অপরিহার্য, তখন তার মতো একজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আমাদের আর্থিক ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলোকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো তার রাজনৈতিক সুবিধাবাদ এবং আর্থিক দুর্নীতির প্রতি আমাদের সচেতন করে তোলে। তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও পরিবারের সাথে তার সম্পর্কের জটিলতাগুলো এই অভিযোগগুলোকে আরও প্রকট করে তুলেছে। এ ধরনের আর্থিক দুর্নীতি দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক, এবং এটি প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন