বর্তমান সময়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর দখলের প্রতিযোগিতা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। বিশেষ করে ইনসিওরেন্স খাতেও ব্যাংক দখলের মতো এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলছে। এই প্রতিযোগিতার কেন্দ্রে থাকা মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, যিনি ক্ষমতাসীন সরকারের কিছু প্রভাবশালী মন্ত্রীদের সমর্থন নিয়ে রুপালী লাইফ ইনসিওরেন্স এবং সোনালী লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসেছেন।
এস আলম গ্রুপের মতো তিনি ইইন্সুরেন্স কোম্পানি নিয়ন্ত্রনের নেশা
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের উত্থান ও ইনসিওরেন্স খাতে প্রভাব
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস এক সময় পুলিশরে একজন ইন্সপেক্টর ছিলেন এখন হাজারহাজার কোটি টাকার মালিক। তিনি জাতীয় পার্টি আমলে সুবিধা নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের কিছু মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে তাদের সহায়তায় ইনসিওরেন্স খাতের দুই বড় কোম্পানির চেয়ারম্যান হয়েছেন। তার মেয়ে রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি এবং মেয়ের জামাই সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
কোম্পানির অর্থ লোপাটের অভিযোগ
দুই কোম্পানি থেকে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস এবং তার ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারম্যান এবং এমডি পদে থেকে তারা বিভিন্ন সুবিধাবাদী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক তথ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে, কিন্তু প্রভাবশালী মন্ত্রীর সহযোগিতায় এসব অভিযোগ তেমনভাবে প্রকাশ্যে আসেনি।
রাজনীতিকদের সাথে সম্পর্ক ও বিনিয়োগ
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এবং সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে রুপালী এবং সোনালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অর্থ লোপাটের যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এই মন্ত্রীরা কোম্পানিতে বিনিয়োগের আড়ালে তাদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ সেখানে বিনিয়োগ করেছেন।
এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে যথাযথ তদন্ত ও পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এই ধরনের অনিয়ম চলতে থাকবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আরো গভীর সংকট সৃষ্টি হবে।
ইন্স্যুরেন্স খাতে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মতো ক্ষমতাবানদের আধিপত্য এবং তাদের অর্থ লোপাটের কারণে দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যদি সময়মতো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে হয়তো এই দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।
মন্তব্য করুন