বিএনপি-জামাত ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমন্বয়কারীদের দাবি, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। তাদের এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে ড. ইউনুস আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে রাজনীতির ময়দানে চলছে কথিত “সংস্কার” নামে প্রতিহিংসার খেলা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও দমনপীড়নের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন নয়, তবে এই প্রতিহিংসার মাত্রা যেন এবার সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করেছে। সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অবক্ষয়কেই আরও স্পষ্ট করছে।
প্রতিহিংসার রাজনীতির এই প্রবণতা কেবল বর্তমানের বিরোধী দলগুলোর জন্য চাপ হয়ে উঠছে না; বরং এটি দেশের সামগ্রিক গণতান্ত্রিক পরিবেশকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। রাজনৈতিক সংস্কারের নামে একপক্ষীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হলে রাষ্ট্রের ভিত্তি দুর্বল হয় এবং নাগরিক অধিকার খর্ব হতে শুরু করে।
কোনো দল বা ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধ করলেই কি রাজনৈতিক ময়দান শান্ত হবে, নাকি এটি সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে?
গণতন্ত্রের মূল ভাবনা হচ্ছে জনগণের অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে জনগণের সেই অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে।
এটি সাময়িকভাবে বিরোধী পক্ষের জন্য সুবিধাজনক মনে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলবে।
ছাত্র রাজনীতির গুরুত্ব উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। ছাত্ররাজনীতি বরাবরই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শেকড় হিসেবে বিবেচিত।
ছাত্রলীগ বা যে কোনো ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে শুধুমাত্র একটি সংগঠন নয়, বরং একটি পুরো প্রজন্মের রাজনৈতিক চর্চার পথ রুদ্ধ করা হয়।
রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য নিষেধাজ্ঞা কোনো স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। বরং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার মূলে প্রবেশ করাই স্থায়ী সমাধানের পথ।
দেশের নেতৃত্বের দায়িত্ব বর্তায় এমন একটি সমাধান খুঁজে বের করা যা কোনো দল নিষিদ্ধ না করেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারে।
জনগণের মতপ্রকাশ ও রাজনৈতিক অধিকার সংরক্ষণ করেই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কে উদ্যোগ নিতে হবে।
মন্তব্য করুন