বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর জীবনী পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার যে অন্যায় করেছে তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। মওলানা ভাসানী তাঁর মানবতাবাদী কর্মের মাধ্যমে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। তিনি আমাদের ইতিহাসের অমূল্য সম্পদ। তাকে সম্মান জানালে আমরা জাতি হিসেবে গর্বিত হবো। ইতিহাসে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে কাউকে খাটো করা যায় না। ইতিহাস তাঁর আপন গতিতে চলে। মওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে আমাদের মুক্তি সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস রচিত হবে না। ২৬ অক্টোবর, শনিবার সকাল ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে ৫ম ও ৮ম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক থেকে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জীবনী প্রত্যাহারের প্রতিবাদ এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৭ম থেকে ৯ম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরিউক্ত কথা বলেন।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুজ্জামান হীরার সঞ্চালনায় উক্ত গণসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এর চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিম, যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল বিশ্বাস, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ফারুক হাসান, সাবেক কমিশনার ফরিদ উদ্দিন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মোঃ আলী, জামিল আহমেদ, যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান হাবিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম, মোশারফ হোসেন নারী নেত্রী সোনিয়া আক্তার, কৃষক পরিষদের আহ্বায়ক হাজী মাসুদ, যুব পরিষদের আব্দুল আজিজ, বংশাল থানা সভাপতি ইমরুল হাসান অসীম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
অতিথিগণ তাদের বক্তব্যে আমাদের জাতীয় ইতিহাসে মওলানা ভাসানীর গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তুলে ধরে বলেন, তিনি আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি-সংগ্রাম এবং আমাদের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন। এদেশের মেহনতি মানুষের অন্তরে চিরঅম্লান। মওলানা ভাসানীকে তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে আড়াল করে অন্য কাউকে প্রতিষ্ঠা করা ফ্যাসিস্ট সরকারের হাস্যকর প্রচেষ্টা। ইতিহাস সবার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই ইতিহাস থেকে কাউকে মুছে ফেলা যাবে না। মুক্তিকামী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ২০২৫ সালের নতুন পাঠ্যপুস্তকে মওলানা ভাসানী জীবনী অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার কয়েক বছর পূর্বেও পাঠ্যপুস্তক থেকে মওলানা ভাসানীর জীবনী বাদ দেয় সে সময় মওলানা ভাসানীর অনুসারীদের কঠোর আন্দোলনের মুখে পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করতে বাধ্য হয়। ২০২৫ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষে ৭ম থেকে ৯ম শ্রেণীর নতুন পাঠ্যপুস্তকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মওলানা ভাসানীর জীবনী পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অন্যথায় পাঠ্যপুস্তকে মওলানা ভাসানীর জীবনী অন্তর্ভূক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মন্তব্য করুন