স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা আজও কিছু মৌলিক প্রশ্নের মুখোমুখি—কেন আমাদের এই দেশকে ভালোবাসার পরিবর্তে বিভক্তির রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়তে হয়? কেন আমরা সেই শত্রুর পক্ষে বারবার ঝুঁকে পড়ি, যারা কখনোই এই দেশ বা এ দেশের মানুষকে ভালো থাকতে দিতে চায় না? এই প্রশ্নগুলো আমাদের জাতির অস্তিত্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শিখিয়েছে যে শোষণ, নিপীড়ন, এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করেই একটি স্বাধীন জাতি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আজও আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সেই পুরনো শত্রুতার ফাঁদে আটকে আছি। যারা একসময় আমাদের ওপর তাবেদারি চাপিয়ে দিয়েছিল, তাদের সঙ্গে মিত্রতার চেষ্টা আমাদের স্বাধীনতার মর্মবাণীকে ভুলে যাওয়ার শামিল।
আমাদের দেশের উন্নয়ন এবং মানুষের মন জয় করার জন্য বিভেদ নয়, ঐক্যের রাজনীতি প্রয়োজন। নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করার পরিবর্তে আমাদের এমন একটি সমাজ গঠন করতে হবে, যেখানে প্রতিটি মানুষ আর্থিক, সামাজিক, এবং মানসিকভাবে সুখে থাকবে। সাম্প্রদায়িকতা বাদ দিয়ে একটি মানবিক সমাজ গড়ে তোলাই হতে পারে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য।
অর্থনৈতিক উন্নতি ছাড়া জনগণের জীবনে স্থায়ী শান্তি আসবে না। জনগণের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, শিক্ষা এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন, এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন যারা জনগণের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও আমাদের এই সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে, যা আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির বড় প্রশ্ন তুলেছে। সময় এসেছে নিজস্ব ভাবনা এবং পথ নির্ধারণের। জনগণের সেবায় নিয়োজিত থেকে, তাদের মন জয় করে, আমরা সত্যিকারের স্বাধীন এবং সুখী বাংলাদেশ গড়তে পারি।
দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করাই যে কোনো নেতৃত্বের প্রধান যোগ্যতা। বিভাজনের রাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িক চিন্তা থেকে বের হয়ে আমরা একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে স্বাধীনতার প্রকৃত লক্ষ্য অর্জিত হবে। আসুন, আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুখী, শান্তিপূর্ণ এবং স্বচ্ছল বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
মন্তব্য করুন