সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অল্প খরচে অধিক লাভজনক ফসল কচুর চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আজ। প্রতিবিঘা জমিতে কচু চাষ করতে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এক বিঘা থেকে উৎপাদিত কচুর ডাটাসহ শাকপাতা, কচুর লতা ও কচু বিক্রি করে আয় হচ্ছে এক লাখ ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে লাভবান হচ্ছেন শাহজাদপুরের কচু চাষিরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ অঞ্চলের কচু বিক্রির জন্য যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ধানের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় কচু আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।
শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নসহ ১৩টি ইউনিয়নের কৃষকরা চলতি মৌসুমে ধানের পাশাপাশি ব্যাপক ভিত্তিতে লতিরাজ ও পানি কচুর আবাদ করেছে। বিগত সময়ে এলাকার গুটিকয়েক কৃষক কচুর আবাদ শুরু করলেও এর প্রবৃদ্ধি দেখে এবার আরও অন্তত ৫০ জন কৃষক তাদের জমিতে কচুর আবাদ করেছেন। জমিতে কচুর বাম্পার ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় কচু চাষিদের মুখে ফুঁটে উঠেছে হাসি। উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের বড় মহারাজপুর, ছোট মহারাজপুর, হরিনাথপুর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে এবার কচুর আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের বড় মহারাজপুর গ্রামে এবার সবচেয়ে বেশি কচুর চাষ হয়েছে। এ ছাড়াও বেলতৈল ও রুপবাটি ইউনিয়নেও কচুর চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার কচুর বাম্পার ফলনও হয়েছে।
উপজেলার বড় মহারাজপুর গ্রামের কচু চাষি কুরমান প্রামাণিক বলেন, এক বিঘা জামিতে ধান রোপণ করে যে লাভ হয় একই জমিতে কচু চাষ করে তার চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার কচু চারা লাগানো যায়। উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি বিঘায় উৎপাদিত কচু থেকে কৃষকের ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ হয়।
একই এলাকার কচু চাষি চাঁদ বাবু জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে লতিরাজ কচুর আবাদ করেছেন। এতে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ওই কচু বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়েও তার এক লাখ টাকা লাভ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহমেদ বলেন, ‘কচু চাষে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। সাথী ফসল বা সবজি হিসেবেও চাষ করা যায়। খরচ কম ও সহজে বিক্রি করা যায়, বর্তমানে সবজি হিসেবে বাজারেও কচুর চাহিদা রয়েছে। বাজার মূল্য ভাল থাকায় শাহজাদপুরের কৃষকরা দিন দিন কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন