একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ডামাডোলের বাজনা জোরেশোরে চলছে। প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতীকের প্রচার প্রচারণা চলছে জাকজমকপূর্নভাবে। ফেস্টুন, পোষ্টার, ব্যানার, ফেসবুক ও প্রচার মাইকের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝেও নির্বাচনী উৎসব সৃষ্টি হয়েছে।
ভোটাররা হিসাবনিকাশ করতে শুরু করছেন-কার হাত ধরে হবে উপজেলা বাসীর ভাগ্য উন্নয়ন। চলতি মাসের ২১ তারিখে উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। উপজেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা যায় হাটবাজারের চা দোকান থেকে শুরু করে বাড়ির বৈঠকখানা পর্যন্ত চলছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলাপ আলোচনা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রতীক না থাকায় সরকারি দলের একাধিক প্রার্থী এই উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।
বিএনপি, জামায়াত ও অন্য কোন দল থেকে কোন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি। চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলহাজ্ব নবী নেওয়াজ খান বিনু তাহার নির্বাচনী প্রতীক হেলিকপ্টার তিনি জানান, আমি বিশ্বাস করি, এই উপজেলা বাসী অব্যশই একজন যোগ্য প্রার্থীকে বিপুল ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আর আমি আশাবাদী যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের কাছে আমিই বিবেচিত হবো, ইনশাআল্লাহ ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশা রাখি। তিনি আরো বলেন, আমি নির্বাচনে জয়ী হলে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়ন করবো।
চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিনা মির্জা মুক্তি তাহার নির্বাচনী প্রতীক মোটরসাইকেল তিনি জানান, ইনশাআল্লাহ আমিই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হবো, জনগনের দোয়া আর ভালোবাসায় নির্বাচিত হলে এই উপজেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার উন্নয়ন করবো, সুখে দুখে মানুষের পাশে থাকবো।
চেয়ারম্যান প্রার্থী আকমাল হোসেন তাহার নির্বাচনী প্রতীক আনারস তিনি জানান, এই উপজেলার মানুষ আমাকে জয়যুক্ত করবেন আমি আশা রাখি, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হলে এই উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাঈদ স্বপন তাহার নির্বাচনী প্রতীক চশমা তিনি জানান, আমি বিশ্বাস করি এই উপজেলার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। আমি জয় লাভ করলে এই উপজেলাকে একটি মাদকমুক্ত উপজেলা ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার যে মিশন ও ভিশন তা বাস্তবায়নে অংশীদার হবো।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লাভলী পারভীন এর নির্বাচনী প্রতীক হাঁস, তিনি জানান আমার আওয়ামী লীগ পরিবারের আতুর ঘরেই জন্ম, আমার স্বামী কে,এম সাব্বিরুল ইসলাম (সাব্বির) সরকারি আকবর আলী কলেজের সাবেক ভিপি, আমি উল্লাপাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য হিসাবে দীর্ঘদিন উল্লাপাড়ার মাটি ও মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি,
আমি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইতে পারলে উল্লাপাড়া উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন করে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।
তাই অত্র এলাকার সকল জনগণ আমার পাশে আছে তাঁরা তাঁদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবেন ইনশাআল্লাহ।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঝর্ণা খাতুন তাহার নির্বাচনী প্রতীক সেলাই মেশিন তিনি জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ দলের সাথে কাজ করে আসছি, আমি আশা করি, এই উপজেলাবাসী আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবেন। আমি নির্বাচিত হলো নারী জাগরন থেকে শুরু করে এই উপজেলা কে একটি আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।
উধুনিয়া, মোহনপুর, বড়পাঙ্গাসী ভোটাররা জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যে কয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন তারা সবাই যোগ্য প্রার্থী তাদের মধ্যে থেকে আমরা যোগ্য একজনকে নির্বাচিত করবো। বাঙ্গালা ইউনিয়নের ভোটার হান্নান জানান, বাঙ্গালা ইউনিয়নসহ সারা উপজেলায় ভোটারদের মাঝে ভোটের উৎসব রয়েছে। আগামী ২১ তারিখে ভোট কেন্দ্র গিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে আমরা ভোট দিব। সদর ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কায়েস জানান, যেহেতু এবার কোন দলীয় প্রতীক নাই তাই ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারবেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদের রুমি জানান, সময় এসেছে যোগ্য প্রার্থী কে বেঁছে নেয়ার আমরা বিশ্বাস করি, এই উপজেলার মানুষ যোগ্য প্রার্থী কে ভোট দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়যুক্ত করবেন।
উল্লাপাড়া পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ। মোট ভোটার সংখ্যা ৪,৪৩,৪৪০। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২,২৭,১৪৮। নারী ভোটার সংখ্যা ২,১৬,২৮৪ ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা ৮। আগামী ২১ মে ভোটাররা তাদের মনোনীত যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করে আগামী ৫ বছরের জন্য তাদের উন্নয়নের কান্ডারী হিসেবে বেছে নেবেন এমনটাই সচেতন মহলের আশাবাদ।
মন্তব্য করুন