ঢাকা মেডিকেল কলেজ গণপূর্ত বিভাগে চলছে হরিলুট। খোদ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আজমুল হকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে দীর্ঘ ২ বছর অধিককাল সময় ধরে লুটপাট চললেও দেখার কেউ নেই। একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, তিনি ঠিকাদারদের সাথে সিন্ডিকেট করে ২০% কমিশনের বিনিময়ে কাজ দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয় ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার কথা বলে অগ্রীম ২০% কমিশনের টাকা নিয়েও অনেককে কাজ না দেয়ায় ঠিকাদারের হাতে লাঞ্চিত হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে তার অধীনে প্রায় হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজই তার নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করাচ্ছেন। এছাড়া তিনি এপিপি ও থেকে বরাদ্দের প্রকল্প পাশের ক্ষেত্রে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ২০ শতাংশ বেশী কমিশন নিয়ে পাশ করে আসছেন। কমিশন না দিলে ফাইল আটকে রাখার ও অভিযোগ রয়েছে। তিনি এই কর্মস্থলে যোগদানের পর যতগুলো কাজ সম্পন্ন করেছেন প্রত্যেকটিই নিম্নমানের। যা সরেজমিন অনুসন্ধানে প্রমানিত হবে। বেশ কিছু ছোট প্রকল্পে কাজ না করেই বিল পরিশোধের অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘ চাকুরী জীবনের প্রতিটি কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনকালে তার নির্ধারিত বরাদ্দের বাইরে ঘুপচি বিজ্ঞাপন করে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি কাজ না করেই ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করার অভিযোগে শোকোজও খেয়েছেন অথচ গণপূর্ত অধিদপ্তর তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। কারণ হিসেবে জানা যায় তৎকালীন সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারের সাথে সখ্যতার কারণে ঐ সময় তিনি সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেন।
একসময় তিনি সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। বর্তমান প্রধান প্রকেীশলীর সাথেও তিনি সখ্যতা গড়ে তুলে লুটপাট চালালেও থেকেগেছেন ধরাছোয়ার বাইরে। সম্প্রতি নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল হকের বিরুদ্ধে দুদকের দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায় তিনি অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যেমে প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক।
রাজধানীর গুলশানে আলিশান ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি বাড়ি নং ১৮৯/এ/সি, রোড ২৭/বি তে ১২ কোটি টাকা বাজার মূল্যের ৮ কাঠা প্লট, রামপুরা বনশ্রী ব্লক-ডি, বাসা নং- ৭৯/১/ডি তে ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৬তলা বাড়ী, বাসাবো বৌদ্ধমন্দিরে পাশে সুগন্ধা ভিলার ৩য় তলায় স্ত্রীর নামে ১৩শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের ৪র্থ তলায় ডি-ব্লকে দোকান নং- ৩৪/ডি, ৪৫/ডি নাম্বারের দোকান, মোহাম্মদপুর কাঁচা বাজারের পাশে বাড়িসহ তার রয়েছে ব্র্যান্ড নিউ হ্যারিয়ার লেক্সাস গাড়ি।
সূত্র মতে তার গ্রামের বাড়িতে করেছেন অঢেল সম্পদ। সহ স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে কয়েক কোটি টাকা। শুধুমাত্র গণপূর্ত বিভাগে চাকুরীর সুবাদে তিনি এত বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ গণপূর্ত বিভাগের কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে তাকে অপসারণ করে গত দু’বছরের কর্মকান্ড উর্দ্ধতন কোন কর্মকর্তার মাধ্যেমে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে কোটি কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের ঘটনা বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল হককে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন