নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার চরঘোনাপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ টুকু শেখ ও মমতাজ বেগমের বড় ছেলে এস এম শামীমকে ২০১৩ সালের ১৭ই আগস্ট যশোর মনিহারের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তি। মাইক্রোতে তুলে নিয়ে কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। যারা তুলে নেয় আজও তাদের সঠিক পরিচয় পায়নি শামীম।
বছর পর লালমনির হাট জেলার বুড়িমারী বর্ডার সংলগ্ন এলাকায় তাকে ফেলে রেখে যায়। তার পরে সে দীর্ঘ ৫ বছর পর বাড়ীতে এসে জানতে পারে ২০১৫ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে লোহাগড়া উপজেলার ইটনা ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে চাকুরীটিও চলে গেছে। এদিকে দীর্ঘদিন পর বাড়ীতে এসে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী তার নামে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলায় তার অবর্তমানে ২ বছরের সাজা হয় এবং ২ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা জরিমানা হয়।
একদিকে চাকুরী নেই, অন্যদিকে স্ত্রীর মামলার সাজা। দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন শামীম। অথচ তার একটি উজ্জল ভবিষ্যৎ ছিল। সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেক ২০০৭ সালে বাংলায় অনার্স কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়েছিল। এছাড়াও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টেও চাকুরী হয়েছিল এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়েও সে চাকুরী পেয়েছিল, কিন্তু এলাকায় থাকার সুবিধার কারণে পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনেই চাকুরীরত অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছিল। এ বিষয়ে তার বোন বিউটি গত ২০১৩ সালের ২০ই আগস্ট লোহাগড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে, যাহার ডায়রি নং-৮৩৫। বর্তমানে ন্যায় বিচার ও চাকুরী ফিরে পাওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নড়াইল জেলা প্রশাসক ও নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেছে, তার বিশ্বাস সে তার চাকুরী ফেরতসহ ন্যায় বিচার পাবেন।
এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার প্রত্যাশায় বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মহাসচিব এডভোকেট সাইফুল ইসলাম সেকুল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আল-আমিন।
মন্তব্য করুন