ঢাকাসোমবার , ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ সংবাদ

বগুড়ার শেরপুরে রাতে মন্দিরে হামলা ভাঙচুর

রায়হান পারভেজ ষ্টাফ রিপোর্টার:
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩ ৪:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বগুড়ার শেরপুরে একটি মন্দিরে ভাঙচুরসহ দানবাক্স, পূজার সরঞ্জামাদি লুটপাট এবং দৈনন্দিন পূজা অর্চণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর ) সন্ধ্যা সাতটায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বেলতা গ্রামের মাঝি পুকুর পাড়ে কালিমাতার মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গেলে, ওই মন্দিরের পূজারী সঞ্জয় সরকার জানান, অন্তত ২০০ বছর ধরে এই কালিমাতার মন্দিরে পূজা অর্চনা হয়ে আসছে।
তৎকালীন সিএস খতিয়ানে ওই পুকুরটি ২ দশমিক ২২ একর সম্পত্তির উপর। এই পুকুর পাড়ের পশ্চিম পাড়ে ১০ শতাংশ জমির উপরে এই মন্দির। ওই সিএস খতিয়ানে এই সম্পত্তি জনসাধারণের ব্যবহার্য্য সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
এই পুকুরটি এবং পুকুর পাড়ের মন্দিরটি স্থানীয় বেলতা গ্রামের নির্মল চন্দ্র সরকার ও তার জ্যাঠাতো ভাই পরিমল চন্দ্র সরকার নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে আন্তত আরও ১০ জনকে সঙ্গে নিয়ে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মন্দিরে প্রবেশ করে এবং মন্দিরটি উচ্ছেদে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ সময় মন্দিরের আগত দর্শনার্থীদের কালিমাতা মন্দির উন্নয়নের দান বাক্স , মন্দিরের সামনে আটচালার ছয় বান্ডিল ঢেউটিন ও পূজার থালা-বাসন তারা লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ছাড়াও মন্দিরের পূজা অর্চনার জন্য তৈরী ফুলের বাগান কেটে ফেলে ভোগঘর ও টিউবওয়েলের মাথা খুলে নিয়ে যায়।
এতে মন্দিরের অন্তত ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুটপাট করা হয়েছে।
এ সময় তিনি বাধা দিতে গিয়ে হামলাকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানান।
এমতাবস্থায় গতকাল রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তিনি পুনরায় মন্দিরে দৈনন্দিন পূজা অর্চনায় গেলে এই পূজাতেও পরিমল চন্দ্র সরকার তাকে বাধা দেয়।
এ নিয়ে পরিমল চন্দ্র সরকার বলেন, এই পুকুর ও পুকুরের পাড় তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। এজন্য রোববার সন্ধ্যার পর পুকুর পাড়ে এসে টিউবওয়েলের মাথা খুলে নিয়েছেন। ভোগঘর ভেঙেছেন, ফুলের বাগানের গাছগুলো কেটেছেন ও মহাদেবের আসন ভাঙচুর করেছেন।
মন্দিরে পূজা অর্চনা করতে হলে প্রয়োজনে তারা করবেন, অন্য কাউকে তারা পূজা করতে দিবেননা বলেও জানান।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের পুকুর পাড়ে মন্দিরসহ ফুলের বাগান, ভোগঘর, টিউবওয়েল বসানো হয়েছে তাদেরকে না জানিয়ে।
বেলতা গ্রামের বেশ কয়েকজন এই প্রতিবেদককে বলেন, এই মন্দিরে অন্তত ২০০ বছর ধরে পূজা হয়ে আসছে। বাপ দাদার মুখে তারা শুনেছে। প্রত্যেক মঙ্গলবারে এখানে ভক্তবৃন্দের মাঝে পূজা অর্চনা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হতো।
সেই ধারাবাহিকতায় এখনো প্রতি মঙ্গলবার ৬০ থেকে জনের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
আয়রা গ্রামের মিলন কুমার সরকার বলেন, পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে এই মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকার মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবু সংগ্রাম কুন্ডু বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা বলেন, ওই মন্দিরে এই ঘটনা জানার পরেই রোববার রাতে তিনি ওই মন্দিরে গিয়েছিলেন। তিনি ওই মন্দিরের পূজারীসহ স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।